অস্থির হয়ে পড়া পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার রোববার থেকে সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। প্রতিদিন ৫০টি করে আমদানি অনুমতি (আইপি) ইস্যু করা হবে, যেখানে প্রত্যেক আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদাতা পেঁয়াজ আমদানির জন্য আবেদন করেছেন, তারা কেবল পুনরায় আবেদন করতে পারবে। একজন আমদানিকারক একবারের জন্যই এই সুযোগ পাবেন। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক রাখতে এ কার্যক্রম until নতুন নির্দেশনা আসে, ততক্ষণ অব্যাহত থাকবে। মাসখানেক আগে হঠাৎ করে পেঁয়াজের মূল্য ভয়াবহভাবে বাড়তে শুরু করে। মাত্র কয়েকদিনে এটি ৪০ টাকা বেড়ে গিয়ে কেজিতে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দাঁড়ায়। তবে সরকার আমদানি অনুমতি দেওয়ার পর দাম কিছুটা কমে আসে, ধীরেধীরে তা ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় নামতে শুরু করে। গত সপ্তাহে সরকার জানায়, দেশে পর্যাপ্ত পণ্যমজুত রয়েছে এবং নতুন পেঁয়াজ শিগগিরই বাজারে আসবে। সেই সঙ্গে, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় আপাতত আবার আমদানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও মজুতদার ব্যবসায়ীরা সুবিধা নেয়ার সুযোগ নিচ্ছেন, ফলে আবার দাম বাড়ছে। বুধবার রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে থেকে অন্তত ১০ টাকা বেশি। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, এই দামে এখনও গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। যদিও বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ না এলেও পাতাযুক্ত পেঁয়াজ আসছে, যার কেজি দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমদানি বন্ধ হবে – এ খবর শুনে দাম বেড়েছে। মজুতদার ও কৃষক পর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। এর আগে, ৯ নভেম্বর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছিলেন, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম যদি না কমে, তা হলে আবার আমদানি অনুমোদন দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “আমরা বাজারের দৃষ্টি রাখছি। দেশে প্রচুর পেঁয়াজের মজুত আছে। শিগগিরই নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তবে, যদি এই সময়ের মধ্যে দাম না কমে, তাহলে আমদানি অনুমতি নেওয়া হবে।” এছাড়া, তিনি জানান, সরকারের কাছে প্রাথমিকভাবে ২ হাজার ৮০০টির বেশি পেঁয়াজ আমদানির আবেদন রয়েছে। এর ১০ শতাংশ অনুমোদন দিলে দেশে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাবে, তবে দাম দ্রুত কমে যাবে না, যাতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য সরকারের পর্যবেক্ষণ চলছে।
Leave a Reply